মানুষের মনের ভাব প্রকাশ করার একটা মাধ্যম হলো লেখালেখি করা। আমাদের প্রয়োজনে আমাদেরকে নানারকমের লেখালেখি করতে হয়। হতে পারে সেটা কবিতা, গল্প, উপন্যাস বা দিনপঞ্জি লেখা। লেখালেখি ছাড়াও আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন রকমের ছোট-বড় হিসাব করতে হয়। বাজারের হিসাব, বাসাভাড়ার হিসাব, পরীক্ষার ফলাফল প্রস্তুত ইত্যাদি। আমাদের লেখালেখি ও হিসাবের এ কাজগুলো করা এক সময় কষ্টসাধ্য ছিল। কিন্তু তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির বিকাশের ফলে এ কাজগুলো করার জন্য এখন আমাদের হাতের নাগালে রয়েছে অনেক ধরনের সফটওয়্যার। এসব সফটওয়্যারকে বলা হয় অফিস সফটওয়্যার। আমাদের ডেস্কটপ, ল্যাপটপ বা স্মার্টফোনে এ সফটওয়্যারগুলো ব্যবহার করা যায়। লেখালেখির জন্য রয়েছে ওয়ার্ড প্রসেসর আর হিসাবের জন্য রয়েছে স্প্রেডশিট এনালাইসিস সফটওয়্যার। এগুলো সম্পর্কে তোমরা পূর্ববর্তী শ্রেণিগুলোতে প্রাথমিক ধারণা পেয়েছ। এ শ্রেণিতে তোমরা এগুলো সম্পর্কে কিছু অগ্রসর ধারণা পাবে ।
কোনোকিছু লেখার কাজ হলো কল্পনার জগৎকে বাস্তবে নিয়ে আসা। মানুষ তার কল্পনাকে অন্যের কাছে তুলে ধরতে মাধ্যম হিসেবে লেখার কাজ শুরু করে। এ ইতিহাস আমরা অনেকেই জানি। বর্তমানে এ কাজে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে । আর এক্ষেত্রে ওয়ার্ড প্রসেসিং-এর গুরুত্ব অনেক । টেলিভিশন, মোবাইল ফোন বা কম্পিউটার ইত্যাদি যন্ত্রে তথ্য গ্রহণ ও উপস্থাপনের জন্য বেশিরভাগ সময় লিখিত কোনোকিছুর প্রয়োজন হয়। আগে যেভাবেই করা হোক না কেন এখন এ কাজটি করা হচ্ছে ওয়ার্ড প্রসেসরের সাহায্যে। ওয়ার্ড প্রসেসরে কাজ করতে গিয়ে আমরা অনেক সুবিধা পেয়ে থাকি । যেমন,
•নির্ভুলভাবে লেখালেখির কাজ করা যায় এবং ভুল হলে সাথে সাথে সংশোধনের সুযোগ পাওয়া সম্পাদনার সুযোগ থাকায় লেখার কাজ নান্দনিকভাবে উপস্থাপন করা যায় ,নানাভাবে লেখাকে উপস্থাপন করা যায়। যেমন- লেখার আকার ছোট-বড় করা, রঙিন করা, বক্স আকারে উপস্থাপন করা ইত্যাদি পুরো লেখা প্রথম থেকে শুরু না করে নতুন লেখা প্রবেশ করানো, লেখা মুছে ফেলা বা লেখাকে পুনর্বিন্যাসকরার সুযোগ পাওয়া যায়
• ছবি, গ্রাফ, টেবিল, চার্ট ইত্যাদি সংযোজন করে ডকুমেন্টকে আরো আকর্ষণীয় করা যায়
ডকুমেন্ট সংরক্ষণ করে তা যেকোনো সময় ব্যবহার করা যায়। ফলে একই কাজ বারবার করার প্রয়োজন হয় না
প্রয়োজনবোধে দরকারি তথ্য এক ডকুমেন্ট হতে অন্য ডকুমেন্টে কপি করা যায়
• একই সাথে একাধিক ডকুমেন্ট নিয়ে কাজ করা যায় • ফাইন্ড-রিপ্লেস কমান্ড ব্যবহার করে বড় কোনো ডকুমেন্টে অল্প সময়ে শব্দ খোঁজা যায় এবং প্রতিস্থাপন করা যায়
• যখন কোনো ডকুমেন্ট বারবার ব্যবহারের প্রয়োজন হয় তখন সেটিকে টেমপ্লেট আকারে সংরক্ষণ করে রাখা যাতে সময় সাশ্রয় হয়। যেমন- প্রতি সপ্তাহে ল্যাব রিপোর্ট প্রস্তুত করার প্রয়োজন হলে সেটি টেমপ্লেট আকারে সংরক্ষণ করে রাখলে তা বারবার ব্যবহার করা যায়
২০১৮
• বড় আকারের ডকুমেন্টে যেমন গবেষণাপত্রে বিষয়বস্তুর সারণি, রেফারেন্স, ছবির তালিকা, গ্রন্থপঞ্জি ইত্যাদি অনেক কাজ খুবই স্বল্প সময়ে সম্পাদন করা যায়
• বানান দেখার সফটওয়্যার বা স্পেল চেকার-এর সাহায্যে সহজেই বানান সংশোধন করা; স্বয়ংক্রিয়ভাবে বানান সংশোধনের ব্যবস্থাও ওয়ার্ড প্রসেসরে রয়েছে
ডকুমেন্ট সংরক্ষণ করে তা যেকোনো সময়, যতবার ইচ্ছা ততবার প্রিন্ট করার সুবিধা রয়েছে
ইলেকট্রনিক যোগাযোগ ব্যবস্থার মাধ্যমে যেকোনো জায়গায় যেকোনো সময় ডকুমেন্ট প্রেরণ করা যায় কাগজের নথি বা ফাইলের পরিবর্তে ওয়ার্ড প্রসেসরে তৈরি ফাইল খুব সহজেই সংরক্ষণ করা যায় • ফাইলের ব্যবস্থাপনা সহজ যা আধুনিক অফিস ব্যবস্থাপনায় অপরিহার্য।
এছাড়াও ওয়ার্ড প্রসেসিং সফট্ওয়্যারগুলোতে আরও নানা সুবিধা রয়েছে। আমরা এগুলো ব্যবহার করার সময়
অনেক কিছু জানতে পারব। এতসব সুবিধার কারণে প্রতিদিন এর ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ছে। তোমরা পূর্ববর্তী শ্রেণিতে ওয়ার্ড প্রসেসরে নতুন ডকুমেন্ট সৃষ্টি এবং পুরানো ডকুমেন্ট খোলার কৌশল শিখেছ। আরো লিখেছ কীভাবে এ সকল ডকুমেন্ট সংরক্ষণ করতে হয়। এবার আমরা ওয়ার্ড প্রসেসরের আরো কিছু কৌশল শিখব। কিন্তু এজন্য তোমাদের পূর্বে অর্জিত জ্ঞান ও দক্ষতা কাজে লাগাতে হবে।
আমরা জানি মাইক্রোসফট অফিস হলো পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় ও বহুল ব্যবহৃত সফটওয়্যার। এছাড়াও বিভিন্ন ধরণের অফিস সফটওয়্যার রয়েছে। যার যেকোন একটি আমরা ব্যবহার করতে পারি। বর্তমানে অনেকেই এগুলোর সর্বশেষ সংস্করণ ব্যবহার করছে। তবে যেকোন একটি সংস্করণে অভিজ্ঞ হলে অন্যটি ব্যবহার করতে কোনো অসুবিধা হয় না। বাংলাদেশে যেহেতু মাইক্রোসফট অফিস সফটওয়্যারটি বেশি ব্যবহৃত হয় তাই এখানে আমরা মাইক্রোসফট অফিস ২০০৭ এর মাইক্রোসফট ওয়ার্ড এবং মাইক্রোসফট এক্সেল এর ভিত্তিতে আলোচনা করব।
Read more